আদা খেলে কি হয়? আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন

আপনারা আজ জানতে চেয়েছেন যে আদা খেলে কি হয়? এবং আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি? সেই সম্পর্কে। তাই চলুন দেরি না করি জেনে আসি আদার সকল তথ্য গুলি। এমন আরো তথ্য পেতে চাইলে আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে কমেন্ট করে জানান। আদা একটি উদ্ভিদ যা মূলত মসলা এবং ভেষজ ঔষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে আদা অন্যতম। এদের রাইজোম সুগন্ধী ও ঝাঁঝালো স্বাদ। এর ভিতরের রং ফিকে হলুদ। গাছটি ২ থেকে ৩ ফুট উচু হতে দেখা যায়। এর পাতাগুলি সুন্দর ভাবে সাজানো থাকে। আদা খাদ্য, পানীয়, আচার, ঔষুধ এবং পারফিউমে ব্যবহৃত হয় এই আদা। আদা এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি করা প্রথম মসলা গুলির মধ্যে একটি। প্রাচীন গ্রীক এবং রোমানরা এটি বেশি ব্যবহার করত। আদা সর্দি নিরাময় করে এছেড়া আদাতে আদা খাওয়ায় বিভিন্ন ধরণের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। এই আদাতে অপকারিতা থেকে উপকারিতার পরিমান বেশি।

আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আদা খাওয়ার উপকারিতঃ- কথায় বলে ‘আদা সকল রোগ নিরাময়ে দাদা। যার অর্থ আমাদের শরীরে সব রোগ নিরাময়ের জন্য আদা যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে সক্ষম। আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি এজেন্ট বিদ্যমান। যার কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা,মধু,ওপানি সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর।

হার্টের জন্য আদাঃ রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে এটা খুবই কার্যকরী।

ডায়াবেটিসের জন্য আদাঃ ডায়াবেটিস জনিত কিডনির জটিলতা দূর করে কাঁচাআদা।

জ্বর জ্বর, বমি বমি ভাবর জন্য আদাঃ এক চা–চামচ আদার রস গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে ছয় থেকে সাতবার খেলে জ্বর জ্বর ভাব ও বমি বমি ভাব কেটে যাবে।

কাশি কমায়, কফর জন্য আদাঃ প্রতিদিন দুবেলা এক চা–চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেলে কাশি কমে, কফ দূর হয়।

ঠান্ডার জন্য আদাঃ ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধে আদার ভূমিকা অপরিসীম। আদার রস একটু গরম করে সমপরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে দিনে কয়েকবার খেলে ঠান্ডা লাগা সেরে যায়।

আদা খেলে বিভিন্ন রোগের মুক্তি মেলে সে গোগ গুলি হলো;-

নংরোগের নাম
০১আমাশয় জনিত রোগ
০২হাঁপানি ও ফুসফুসে সংক্রমণ রোগ
-৩পেটফাঁপা রোধ করে
০৪পেটব্যথা রোগ
০৫ক্যালসিয়াম জনিত রোগ
০৬জ্বর জ্বর, বমি বমি ভাব করে
০৭গলা ব্যথা করে
০৮মাথাব্যথা করে
০৯উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করে
১০কাশি কমায়, কফ দূর করে

 

আদা খাওয়ার অপকারিতাঃ- আপনি উপর থেকে আদা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলেন  এখন জানবেন আদা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে; কিছু লোকের আদা সেবন করলে অ্যালার্জি বেড়ে যায় সারা শরীরে চুলকানি হয়। তাদের আদা খাওয়া বন্ধ করা উচিৎ। এবং দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিৎ। আদা চা ৫ কাপের বেশি পান করলে মাথাব্যথা মাইগ্রেন, অনিদ্রার মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং এক পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করা উচিৎ।উচ্চ রক্তচাপের ঔষুধ সেবনকারীদের বিশেষজ্ঞের যত্নে আদা গ্রহণ করা উচিত। এছাড়া বেশি আদা খেলে পেটে ব্যথা, ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে। অতএব, যে কোনও কিছু পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত শরীরের ক্ষতি হয়।

আদা শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। স্থূলতা বা ডায়াবেটিসের সমস্যায় আদা খুবই উপকারী। আদা হিমোফিলিয়ার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। হিমোফিলিয়া একটি বংশগত ব্যাধি। হিমোফিলিয়ার ওষুধের সঙ্গে আদা খেলে ওষুধের প্রভাবে হস্তক্ষেপ হতে পারে।

হাইপারটেনসন বা ডায়াবেটিসের ঔষুধ খেলে আদা খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভাল। আদা রক্তকে পাতলা করে রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। তাই সাধারণভাবে আদা খাওয়া উপকারী হলেও অ্যান্টি-কোয়াগুলান্ট, বিটা-ব্লকারস বা ইনসুলিনের মতো ওষুধের প্রভাব কমিয়ে দিতে পারে আদা।

আদা খেলে কি হয়?

১০০ গ্রাম আদার উপাদানঃ- ১০০ গ্রাম আদায় আছে ৮০ ক্যালরি শক্তি, স্নেহ পদার্থ ০.৮ গ্রাম, সমৃক্ত চর্বি ০.২ গ্রাম, পলি স্যাচুরেটেড চর্বি ০.২ গ্রাম, মনো আনস্যাচুরেটেড চবি, সোডিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪১৫ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৮ গ্রাম, আঁশ ২ গ্রাম, সুগার ১.৭ গ্রাম, প্রোটিন ১.৮ গ্রাম, ভিটামিন সি ৮%, ভিটমিন বি ৬.১০%, ক্যালসিয়াম ১%, আয়রন ৩%, ম্যাগনেসিয়াম ১০%, এছাড়া আদায় কোনো কোলেস্টেরল নেই।

আদা খেলে যা হয়ঃ

  • পরিমিত আদার রস খাওয়ার জন্য শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়। কেননা আদায় রয়েছে ক্রোমিয়াম, জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়াম। এসকল উপাদান রক্ত প্রবাহের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে।
  • ফুসফুসের সাধারণ যে কোন সংক্রমণ বা রোগের ক্ষেত্রে আদার বেশ কার্যকরী রয়েছে।শ্বাস প্রশ্বাশের সাধারণ সমস্যা দূর করে আদায়। তাছাড়া এটা গলা এবং স্বর তন্ত্রী পরিষ্কার রাখে।
  • পেটের পীড়ায় আদা একটি আদর্শ পথ্য। এটা হজমের পাশাপাশি খাবারের গুণাগুণ শরীরের বিভিন্নঅংশে পৌঁছে দিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। আবার পেটের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও প্রতিরোধ করে এটা। তাছাড়া কিছু খাওয়ার পর পেট ব্যাথায় ভোগার সমস্যা হলে তার জন্যও আদার রস বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • আপনার শরীরে কোথাও ক্ষত থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে ।এতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি, যা কাটাছেড়া ও ক্ষত সারাতে দ্রুত কাজ করে।
  • আপনি যদি রোগা হতে চান তাহলে আদা খেলে সমস্যা নেই তবে আপনি রোগা/শীর্ণকায়,অর্থাৎ ওজন বাড়াতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আদার ব্যবহার পরিহার বা এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ চর্বি গলানোর প্রক্রিয়ায় বিশেষ সহায়কের কাজ করে এই আদায়। আবার আদায় প্রচুর খিদে কমায়। তাই আপনি ওজন কমাতে চাই তাদের জন্য কোনো কাজে আসবে না।
  • মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করে আদা। গর্ভবতী মায়েদের সকাল বেলায়, বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম দিকে শরীর খারাপ লাগে। এ সমস্যা দূর করে কাঁচাআদা।
  • ভাইরাস জ্বর প্রতিরোধে আদার বিশেষ ভূমিকা রাখে। আদার রস একটু গরম করে সমপরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে দিনে কয়েকবার খেলে জ্বর ও ভাইরাস জ্বর সেরে যায়।
  • ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধে আদার ভূমিকা অপরিসীম। আদার রস একটু গরম করে সমপরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে দিনে কয়েকবার খেলে ঠান্ডা লাগা সেরে যায়।
  •  ডায়াবেটিস জনিত কিডনির জটিলতা দূর করে কাঁচাআদা।
  •  যদি কখনো যানবাহনে চড়ার সময় কেউ কেউ অস্বস্তিতে ভোগেন বা অল্প সময় গাড়িতে থাকার পর বমি বমি ভাব হয়।এই বমি বমি ভাব দূর করতে আদার ভূমিকা অনেক। বমি ভাব হলে কাচা আদা চিবিয়ে খেলে তাৎক্ষণিক উপকার করে।সবচেয়ে বড় ব্যাপার আদা মুখের স্বাদ বাড়াতে বেশ অনেক ভূমিকা রাখে।
  • আদা শরীরে কড়া উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে। সে জন্য অন্তঃসত্তারা আদা খেলে প্রিম্যাচিওর শিশু জন্মের আশষ্কা বেড়ে যায়। তাই গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই এটা এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে প্রেগন্যান্সির সপ্তাহ গুলোতে তো একেবারেই খাওয়া যাবে না।
  • আদা ডায়বেটিসের লেভেল কমাতে কার্যকর হলেও যারা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষুধ খান তাদের মোটেও আদা খাওয়া যাবে না।
  • আদা উচ্চ রক্তচাপ লেভেল কমাতে কার্যকর হলেও যারা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষুধ খান তাদের মোটেও আদা খাওয়া যাবে না।
  • আপনি যখন সারাদিন অফিসে বা কর্মে ব্যস্ত সময় পার করে বাসায় ফেরেন,তখন আপনার মাথা শরীর এমনকি মন কিছুই সতেজ থাকে না। এসময় এককাপ আদা চা আপনাকে অনেকটাই ক্লান্তি মুক্তি করবে। কেননা আদার যে সুগন্ধ তা আপনাকে ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে। এবং ধীরে ধীরে আবার আপনি একজন ক্লান্তি মুক্ত শরীরের অধিকারী হয়ে উঠবেন।
  • মহিলাদের ক্ষেত্রে পিরিয়ডসের সময়ে পেটে ব্যথা খুব চেনা বিষয়। কিন্তু এ সময়ে আদা চা যে আপনার প্রদাহ কমাতে পাওে জানতেন কি? আদায় থাকা অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি গুণ আপনার পেট ব্যথা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। আর গরম চা যখন আপনি খাচ্ছেন/খাবেন তখন স্বাভাবিকভাবেই সেটা ব্যথার আরাম দিবে।

আদা খাওয়ার উপকারিতা, আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, আদা খাওয়ার নিয়ম, আদা খাওয়ার অপকারিতা, আদা খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, আদা খাওয়ার কুফল, আদা খাওয়ার উপকার, আদা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা, আদা খাওয়ার উপকারিতা কি, কাচা আদা খাওয়ার উপকারিতা, মেয়েদের আদা খাওয়ার উপকারিতা,  আদা কিভাবে খেতে হয়, আদা খাবার নিয়ম, আদা খাওয়ার উপকারিতা, কাচা আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, কাঁচা আদা খাওয়ার উপকারিতা, আদা গুড়া খাওয়ার উপকারিতা, ছোলা ও আদা খাওয়ার উপকারিতা, আদা খেয়ে ওজন কমানোর উপায়, আদা কখন খাওয়া ভালো, গর্ভাবস্থায় আদা খাওয়া যাবে কি, আদা খেলে কি হয়,আদা খাওয়ার গুনাগুন, আদা চা খাওয়ার উপকারিতা ,আদা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা, ,আদা কখন খেতে হয়, আদা খেলে, আদা অপকারিতা, আদা বেশি খেলে কি হয়, আদা পানি খাওয়ার নিয়ম, আদা জল খাওয়ার নিয়ম, কাঁচা আদা খাওয়ার নিয়ম, আদা এর উপকারিতা কী,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *