গ্রীষ্মকালে শিশুদের ত্বকের জন্য যেমন যত্ন নিই, তেমনি তাদের মাথার ত্বক এবং চুলের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিৎ। আমার মনে হয় সব বাবা মা “গরমে বাচ্চাদের চুলের যত্ন যেভাবে নিবেন” ভাবতে থাকেন।ইনফেকশন প্রতিরোধে গরমে বাচ্চাদের চুলের ভালোভাবে যত্ন জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সঠিকভাবে পণ্য ব্যবহার এবং বাচ্চার খাওয়া দাওয়ায় অতিরিক্ত মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
আরো দেখতে পারেনঃ
- এই গরমে নবজাতক শিশুর যত্ন নিবেন কিভাবে?
- বাচ্চাদের কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায় জেনে নিন
- এই গরমে সব বয়সী শিশুর ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন?
গরমে বাচ্চাদের চুলের যত্ন নিন সুস্থ থাকুন
ঋতু পরিবর্তনের সময় বাচ্চাদের ত্বক অতিসংবেদনশীল হয়ে উঠে, বিশেষ করে গরমের সময় শিশুর মাথার ত্বক ঘেমে অনেক প্রকার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। স্বাস্থ্যকর চুল নিশ্চিত করতে চুলের যত্নের বিশেষ রুটিন ও ফর্মুলা মেনে করা অপরিহার্য।
০১) তেল মালিশঃ শিশুর মাথার ত্বকে অয়েল ম্যাসাজ করুন কারণ এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সহায়তা করে। একটি তেল ম্যাসাজও ভালো ঘুম বাড়াতে সাহায্য করে। তবে খনিজ তেল,ল্যানোলিন মুক্ত তেল,অলিভ অয়েল এবং শীতকালীন চেরি দ্বারা সমৃদ্ধ অয়েল ব্যাবহার করতে পারেন। অলিভ অয়েলে থাকা ভিটামিন ই ত্বককে নরম করতে সাহায্য করে এবং শীতকালীন চেরি ত্বককে প্রশমিত করতে সাহায্য করে।
০২) শ্যাম্পু ব্যবহার করুনঃ চুল এবং মাথার ত্বক পরিষ্কার করার জন্য একটি শ্যাম্পু বা হেড-টু-হিল বেবি ওয়াশ বেছে নিতে পারেন।যে সব শ্যাম্পু প্রোটিনের একটি প্রাকৃতিক উৎস যে সব শ্যাম্পু ব্যাবহারে চুল ময়শ্চারাইজ হয়। হোমমেইড তরমুজ এবং নিম দিয়ে মিশ্রিত একটি বেছে নিতে পারেন। তরমুজ ত্বক ও মাথার ত্বককে সতেজ রাখতে সাহায্য করে এবং নিম ত্বককে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
০৩) আমাদের কি প্রতিদিন শিশুর চুল শ্যাম্পু করা উচিত? না! এমনটা কখনই করবেন না। নবজাতকের চুল ধোয়া সপ্তাহে মাত্র দু’বার করা উচিত, সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুইবার। আপনার শিশুর বেড়ে ওঠার সাথে সাথে ফ্রিকোয়েন্সি সপ্তাহে তিনবার বাড়ানো যেতে পারে।
০৪) চিরুনিঃ চিরুনি করা প্রয়োজন (অন্তত দিনে দুবার) কারণ এটি মাথার ত্বককে উদ্দীপিত রাখে। এছাড়া চুলের বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। আপনার শিশুর চুলের জন্য সঠিক চিরুনি ব্যবহার করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চওড়া এবং নরম ব্রিস্টেড দাঁতওয়ালা চিরুনি ব্যবহার করুন। কেননা শিশুর কোমল মাথার ত্বক অনেক নরম হয়।
০৫) চুলের জটঃ ছোটদের চুল লম্বা বা ঘন হয়ে থাকে ফলে জট এবং গিঁট প্রতিরোধ করার জন্য ভালমানের পুষ্টিকর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। একটি স্প্রে ডেট্যাংলার ব্যবহার করতে পারেন।
০৬) ক্র্যাডল ক্যাপঃ কিছু শিশুর মাথায় লাল ছোপ থাকতে পারে, যাকে প্রায়ই “ক্র্যাডল ক্যাপ” বলা হয়। উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, এটা এমনিএমনি সেরে যায় অথবা কিছু স্টেপ ফলো করতে পারেন- গোসলের আগে শিশুর মাথায় অল্প পরিমাণে তেল মালিশ করা। গোসল হয়ে গেলে একটি নরম কাপড় দিয়ে আলতো ভাবে পানি মুছুন। এরপর চুলটায় খুব ধীরে ধীরে চিরুনি করুন। তারপরেও ক্র্যাডল ক্যাপ না কমলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।
০৭) নিরাপদে স্টাইলঃ যখন শিশুর চুলের যত্নের কথা আসে আর আপনি যদি হেয়ার ড্রায়ার বেছে নিতে চান তবে সর্বনিম্ন তাপ ব্যবহার করুন এবং শিশুর ত্বক থেকে কয়েক ইঞ্চি দূরে ব্যবহার করুন। আপনার শিশুর চুলে সুন্দর ক্লিপ এবং সুন্দর হেডব্যান্ডগুলির উপর নজর রাখুন, কারণ সেগুলি পিছলে গেলে বা টেনে টেনে নিলে চুল ও চুলের গোঁড়ায় ঝুঁকি তৈরি হতে পারে৷
আশা করি, শিশুদের চুলের বৃদ্ধি, শিশুদের চুল পড়া, শিশুদের জন্য সেরা চুলের যত্ন নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে শেয়ার করুন অথবা আপনি নিচের কমেন্ট বক্সে শিশুদের জন্য চুলের যত্ন নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন।
👍আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিন ➳