সাদা ভাতের অপকারিতা

আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ ভাত খেয়ে থাকি। ভাত যেমন সহজে রান্না করা যায় তেমনি ভাত খেলে পেট ভরাও থাকে অনেকক্ষণ। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে ভাতে অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে মানব দেহে। চাল সাদা করলে মানুষ তাতে আকৃষ্ট হয় বেশি। তাই চাল সাদা ও ঝরঝরে করতে বিক্রেতারা তাতে রাসায়নিক ব্যবহার করেন। এতে চালের ওপরের ভিটামিন বি-১ ও অন্যান্য ভিটামিন চলে গিয়ে শুধু কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা মানুষকে মোটা করে। চলুন জেনে আসি সাদা ভাতের অপকারিতা সম্পর্কে কিছু কথা।

সাদা ভাতের অপকারিতা

ভাত হল একটি প্রধান খাদ্য যাতে চিনি (শর্করা/কার্বোহাইড্রেট) বেশি থাকে। ফলে আমাদের দৈহিক বৃদ্ধি বা যৌবন লাভ খুব দ্রুত হয়। ফলস্বরূপ, আমরা দ্রুত বিয়ে করি এবং দ্রুত সন্তান উৎপাদন করি। মনে হয় সেদিন যাকে হাফপ্যান্ট পরে খেলতে দেখেছি, দুদিন পর তাকে সন্তানের মা-বাবা হয়ে ক্লান্ত হতে দেখেছি। অন্য কথায়, ভাত খাওয়া আমাদের উদ্বেগজনক জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ। বিশ্বাস না হলে চীন-ভারত-ইন্দোনেশিয়া-জাপান-কোরিয়া প্রভৃতি ভাত খাওয়া দেশগুলো দেখে নিতে পারেন, প্রতিটি দেশ জনসংখ্যার ওজন নিয়ে বিপর্যস্ত। জনসংখ্যার অভাবনীয় বিস্ফোরণের কারণে সরকার প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেও আমাদের সবার অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা দিতে পারছে না।

ভাত শুধু আমাদের দ্রুত পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে না, আমাদেরকে বার্ধক্যে রূপান্তরিত করে। ফলে আমরা দ্রুত অকেজো হয়ে পড়ি এবং পরিবার, সমাজ ও দেশের বোঝা হয়ে যাই। কারণ যখন আপনি বৃদ্ধ হন, তখন একদিকে আপনার কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়, অন্যদিকে আপনি সম্পূর্ণরূপে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এটা সত্য যে শর্করা/কার্বোহাইড্রেট আমাদের সমস্ত শক্তির প্রধান উৎস এবং এগুলি ছাড়া আমরা অকেজো। এটাও সত্য যে শরীরে অতিরিক্ত (চিনি/শর্করা/কার্বোহাইড্রেট) সরবরাহ আমাদের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর। বিষয়টিকে পানির সাথে তুলনা করা সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত। আমরা সবাই জানি যে স্বাভাবিক পানিই আমাদের বেঁচে থাকার প্রধান কারণ এবং আবার বন্যা (অতিরিক্ত) পানিই আমাদের মৃত্যুর কারণ।

ভাত খাওয়ার অপকারিতা

সাদা ভাতের যে মাড় রয়েছে তাতে উচ্চতর মাত্রায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রয়েছে। যখন কোন খাবারের সাথে আপনি ভাত খান যেমন সবজির সাথে যদি ভাত খান তবে রক্তে শর্করার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ভাত। তবে আপনার যদি ডায়াবেটিস হয়ে থাকে তবে আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিন। আঠালো-মুক্ত ভাত একটি হাইপোলোর্জিক খাবার এবং অনেকের জন্য বিষয়টি আশীর্বাদ। আবার যাদের ভাত পচ্ছন্দ না তারা সহজেই আটা,নুডলস,রুটি খেতে পারেন। এগুলো ভাতের বিকল্প। ভাত যেহেতু কার্ব হাইড্রেটের উৎস তাই একে শক্তিঘরও বলা হয়। ভাত খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি আসে।

আপনি যদি আপনার আদর্শ খাবার হিসেবে ভাত বেছে নেন তাহলে আপনার হার্ট ভালো থাকবে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ভাত রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি আরও কমিয়ে দেয়। ভাত সহজপাচ্য হওয়ায় খুব সহজেই হজম হয়ে যায়। শুধু রান্না করা সহজ নয়, ভাত হজম করাও খুব সহজ। বাদামি চালে যেমন ফাইটিক অ্যাসিড নামে একটি যৌগ থাকে সাদা ভাতে তা থাকে না যা হজমে সমস্যা তৈরি করে। এছাড়া ভাত খেলে ঘুমও ভালো হয়।

 আপনি যখন সাদা ভাত খান তখনও আপনি দ্রবণীয় ফাইবারের একটি বিশাল ডোজ পেয়ে যাবেন বাটায়ারেট নামক প্রতিরোধী স্টার্চে। এই বাটায়ারেট আপনার অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখে। এজন্য ডায়রিয়া হলে বেশিরভাগ সময় সিদ্ধ চাল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *